ওরস্টেডের পরীক্ষা থেকে আমরা জানতে পারি কোনো তড়িৎবাহী তারে স্থির প্রবাহমাত্রা চলতে থাকলে, ওই পরিবাহী তারের চারিপাশে একটি চৌম্বকক্ষেত্র সৃষ্টি হয়। এবং ওই চৌম্বকক্ষত্রের মধ্যে অন্য কোনো তড়িৎবাহী তার বা লুপ রাখলে, ওই তারটি একটি বল (পরিবাহী তারের ক্ষেত্রে) বা টর্ক (আয়তাকার লুপের ক্ষেত্রে) অনুভব করে। এই বল বা টর্কের অভিমুখ ফ্লেমিং এর ডানহস্ত নিয়ম (মোটর নিয়ম) থেকে পাওয়া যায়। অর্থাৎ
Steady Current + Current Carrying Wire/Loop → Generate Steady Magnetic Field
Steady Magnetic Field + Current Carrying Wire/Loop → Force/Torque
কিন্তু প্রকৃতির প্রতিসাম্যের জন্য তখনকার বিজ্ঞানীদের মতে ধারণা তৈরি হয় যে এর ঠিক বিপরীত প্রক্রিয়া ঘটা সম্ভব কিনা? অর্থাৎ
(i) কোনো চৌম্বকক্ষেত্রের মধ্যে তড়িৎবাহী তার রাখলে তার মধ্য দিয়ে প্রবাহমাত্রা সৃষ্টি হবে কিনা?
অথবা,
(ii) চৌম্বকক্ষেত্রে কোনো তারকুন্ডলীর বা লুপের উপর টর্ক প্রযুক্ত করলে ওই তার কুন্ডলীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ সৃষ্টি হবে কিনা?
অনেক পদার্থবিজ্ঞানীদের মধ্যে অবশেষে ইংল্যান্ডের বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে এবং আমেরিকার বিজ্ঞানী জোসেফ হেনরি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এই কৌতুহল নিরসন করেন।
উপরের পরীক্ষাগুলি থেকে সিদ্ধান্ত করা যায়, কুন্ডলীতে উৎপন্ন তড়িৎচ্চালক বলের মান, কুন্ডলী এবং চুম্বকের ভিতর আপেক্ষিক গতির উপর নির্ভর করে। এই আবিষ্ট তড়িৎচ্চালক বলের মান শূন্য হয় যখন কুন্ডলী ও চুম্বকের মধ্যে কোনো আপেক্ষিক গতি থাকে না। তাছাড়া দেখা যায় আপেক্ষিক গতির অভিমুখ বিপরত করা হলে, আবিষ্ট তড়িৎচ্চালক বলের অভিমুখও বিপরীত হয়। এবার ওই তারের কুন্ডলী এবং দন্ডচুম্বক সিস্টেমটিকে রেখে কিছু পরিবর্তন ঘটানো হল। তাতে দেখা যায় গ্যালভ্যানোমিটারের বিক্ষেপ পরিবর্তন হচ্ছে। নীচের তালিকার পরীক্ষাটি ও পর্যবেক্ষণগুলি দেখানো হল।
কুন্ডলীতে আবিষ্ট তড়িৎচ্চালক বলের মান কোন্ কোন্ বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হয় তা এই পরীক্ষাগুলি থেকে জানা যায়। আমরা দেখতে পাই আবিষ্ট তড়িৎচ্চালক বলের মান বৃদ্ধি পায় যখন
(i) যখন চুম্বকটি অধিক শক্তিশালী হয়।
(ii) চুম্বকটিকে কুন্ডলীর দিকে আরো দ্রুতবেগে আনা হয়।
(iii) চুম্বকটি কুন্ডলীর যত নিকটবর্তী হয়।
(iv) চুম্বকের সরণের অভিমুখ কুন্ডলীর তলের সাথে লম্বভাবে থাকে।
(V) কুন্ডলীর ক্ষেত্রফল যত বেশি হয়।
এবার দন্ডচুম্বকটির পরিবর্তে দুটি তারের কুন্ডলী নেওয়া হল। তার মধ্যে একটি কুন্ডলীতে ব্যাটারী যুক্ত করা থাকে। এর ফলে ওই কুন্ডলীতে তড়িৎপ্রবাহমাত্রার জন্য তার চারিপাশের অঞ্চলে একটি চৌম্বকক্ষেত্র সৃষ্টি হয়। ওই তড়িৎবাহী কুন্ডলীর জন্য সৃষ্ট চৌম্বকক্ষে এবার অপর একটি তারের কুন্ডলী নিয়ে, ঠিক দন্ডচুম্বকের ন্যায় একই রকম পরীক্ষাগুলি করা হল। দেখা যায় দন্ডচুম্বকের ন্যায় এই তারের কুন্ডলীর জন্যও একই রকম পর্যবেক্ষণ লক্ষ্য করা যায়। নীচে একটি তালিকার মাধ্যমে পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণগুলি গুলি উল্লেখ করো।
উপরের এই পরীক্ষাগুলি থেকে বোঝা যায়, শুধু দন্ডচুম্বক নয়, ঘটনা যাও হোক না কেন, যেখানেই চৌম্বকক্ষেত্র এবং চৌম্বক প্রবাহের পরিবর্তন ঘটছে, সেখানেই তড়িৎচ্চালক বল আবিষ্ট হবে।
এখন কিছু প্রশ্ন মনের মধ্যে এসে হাজির হয়:
(1) গ্যালভ্যানোমিটারের মধ্যে প্রবাহমাত্রা লক্ষ্য করা যায় যখন কোনো কিছুর একটা পরিবর্তন হয়।
একেবারে প্রথম ধাপের সমস্ত পরীক্ষাগুলি থেকে সিদ্ধান্ত করা যায় যে, গ্যালভ্যানোমিটারের মধ্যে প্রবাহমাত্রার সৃষ্টি হয়, যখন কোনো কিছুর একটা পরিবর্তন ঘটানো হয়। কুন্ডলী স্থির রেখে চুম্বককে সরানো হলে বা চুম্বককে স্থির রেখে কুন্ডলীকে সরানো হয় বা কুন্ডলীর বর্তনীর সুইচ অফ্ বা অন্ করা হয় বা কুন্ডলীটিকে ঘোরানো হয়, তখনই আবিষ্ট তড়িৎচ্চালক বল সৃষ্টি হয় যা বর্তনীতে প্রবাহমাত্রা সৃষ্টি করে।
(2) আবিষ্ট তড়িৎচ্চালক বলের মান কোনো কিছুর একটা পরিবর্তনের সমানুপাতিক।
উপরের দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষাগুলি থেকে দেখা যায় যে, গ্যালভ্যানোমিটারের বিক্ষেপ বেশী হয় যখন এই অজানা রাশিটির পরিবর্তন অত্যন্ত দ্রুত হয়।
(3) এই অজানা ভৌতরাশি যা পরিবর্তিত হলে আবিষ্ট তড়িৎচ্চালকবলের সৃষ্টি হয় তা হল চৌম্বক ফ্লাক্স।
এখন এই অজানা ভৌতরাশিটি কি? যা পরিবর্তিত হলে আবিষ্ট তড়িৎচ্চালকবল সৃস্টি হয়। এই রাশিটিনির্ভর করে -
(i) চুম্বকের মেরুশক্তি
(ii) চুম্বক ও কুন্ডলীর মধ্যবর্তী দূরত্ব।
(iii) কুন্ডলীর ক্ষেত্রফল
(iv) কুন্ডলীর সাপেক্ষে চুম্বকের গতির অভিমুখ। এই রাশিটির পরিবর্তনের হার নির্ভর করে চুম্বকটির গতিবেগের উপর বা কুন্ডলীটিকে ঘোরানো হলে তার কৌনিক গতির উপর। এই ভৌত রাশিটি হল চৌম্বক ফ্লাক্স (Magnetic Flux)। এটাই হল ফ্যারাডের প্রথম স্বীকার্য।
(4) আবিষ্ট তড়িৎচ্চালক বলের অভিমুখ এমন হ। যা চৌম্বক ফ্লাক্সের পরিবর্তনকে বাধা দেয়।
উপরের পরীক্ষায় আমরা দেখতে পাই, আবিষ্ট তড়িতচ্চালক বলের মান বিপরীত হয় যখন চুম্বকের গতির অভিমুখ পাল্টে দেওয়া হয়।
Steady Current + Current Carrying Wire/Loop → Generate Steady Magnetic Field
Steady Magnetic Field + Current Carrying Wire/Loop → Force/Torque
কিন্তু প্রকৃতির প্রতিসাম্যের জন্য তখনকার বিজ্ঞানীদের মতে ধারণা তৈরি হয় যে এর ঠিক বিপরীত প্রক্রিয়া ঘটা সম্ভব কিনা? অর্থাৎ
(i) কোনো চৌম্বকক্ষেত্রের মধ্যে তড়িৎবাহী তার রাখলে তার মধ্য দিয়ে প্রবাহমাত্রা সৃষ্টি হবে কিনা?
অথবা,
(ii) চৌম্বকক্ষেত্রে কোনো তারকুন্ডলীর বা লুপের উপর টর্ক প্রযুক্ত করলে ওই তার কুন্ডলীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ সৃষ্টি হবে কিনা?
অনেক পদার্থবিজ্ঞানীদের মধ্যে অবশেষে ইংল্যান্ডের বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে এবং আমেরিকার বিজ্ঞানী জোসেফ হেনরি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এই কৌতুহল নিরসন করেন।
পরীক্ষা | পর্যবেক্ষণ |
---|---|
একটি পরিবাহী তারের কুন্ডলী নেওয়া হল যাতে একটি গ্যালভ্যানোমিটার যুক্ত করা থাকে। ওই কুন্ডলীর সামনে একটি দন্ডচুম্বককে স্থিরভাবে রাখা হল। | গ্যালভ্যানোমিটার কোনো প্রবাহমাত্রা দেখায় না। |
এবার কুন্ডলীটিকে স্থির রেখে দন্ডচুম্বকটির উত্তরমেরুকে, কুন্ডলীর দিকে নিয়ে আসা হল। | গ্যালভ্যানোমিটারে প্রবাহমাত্রা দেখায়। এই প্রবাহমাত্রার অভিমুখ ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে হয়। |
এবার কুন্ডলীটিকে স্থির রেখে দন্ডচুম্বকটির উত্তরমেরুকে, কুন্ডলী থেকে দূরে নিয়ে যাওয়া হল। | গ্যালভ্যানোমিটার প্রবাহমাত্রা দেখায়। এই প্রবাহমাত্রার অভিমুখ ঘড়ির কাঁটার অভিমুখে হয়। |
এবার কুন্ডলীটিকে স্থির রেখে দন্ডচুম্বকটির দক্ষিনমেরুকে, কুন্ডলীর দিকে নিয়ে আসা হল। | গ্যালভ্যামোমিটার প্রবাহমাত্রা দেখায়। এই প্রবাহমাত্রার অভিমুখ ঘড়ির কাঁটার অভিমুখে হয়। |
এবার কুন্ডলীকে স্থির রেখে দন্ডচুম্বকটির দক্ষিনমেরুকে, কুন্ডলী থেকে দূরে নিয়ে যাওয়া হল। | গ্যালভ্যানোমিটার প্রবাহমাত্রা দেখায়। এই প্রবাহমাত্রার অভিমুখ ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে হয়। |
এবার দন্ডচুম্বকটিকে স্থির রেখে কুন্ডলীটিকে চুম্বকের দিকে নিয়ে যাওয়া হল বা চুম্বক থেকে দূরে নিয়ে যাওয়া হল। | গ্যালভ্যানোমিটার প্রবাহমাত্রা দেখায়। কুন্ডলীটিকে চুম্বকের দিকে নিয়ে যে অভিমুখে প্রবাহমাত্রা হয়, কুন্ডলীটিকে চুম্বক থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গেলে, প্রবাহমাত্রা তার বিপরীত দিকে হয়। |
উপরের পরীক্ষাগুলি থেকে সিদ্ধান্ত করা যায়, কুন্ডলীতে উৎপন্ন তড়িৎচ্চালক বলের মান, কুন্ডলী এবং চুম্বকের ভিতর আপেক্ষিক গতির উপর নির্ভর করে। এই আবিষ্ট তড়িৎচ্চালক বলের মান শূন্য হয় যখন কুন্ডলী ও চুম্বকের মধ্যে কোনো আপেক্ষিক গতি থাকে না। তাছাড়া দেখা যায় আপেক্ষিক গতির অভিমুখ বিপরত করা হলে, আবিষ্ট তড়িৎচ্চালক বলের অভিমুখও বিপরীত হয়। এবার ওই তারের কুন্ডলী এবং দন্ডচুম্বক সিস্টেমটিকে রেখে কিছু পরিবর্তন ঘটানো হল। তাতে দেখা যায় গ্যালভ্যানোমিটারের বিক্ষেপ পরিবর্তন হচ্ছে। নীচের তালিকার পরীক্ষাটি ও পর্যবেক্ষণগুলি দেখানো হল।
পরীক্ষা | পর্যবেক্ষণ |
---|---|
তারের কুন্ডলীটিকে স্থির রেখে দন্ডচুম্বকটির বেগ বৃদ্ধি করা হ।। আর্থাৎ দন্ডচুম্বকটিকে আরো বেশি বেগে কুন্ডলীর সামনে আনা হল বা বেশি বেগে কুন্ডলী থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল। | গ্যালভ্যানোমিটারের বিক্ষেপ বৃদ্ধি পায়। |
এবারদন্ডচুম্বকটির মেরুশক্তির মান বৃদ্ধি করা হল। | গ্যালভ্যানোমিটারের বিক্ষেপ বৃদ্ধি পায়। |
তারের কুন্ডলীটির ব্যাস বৃদ্ধি করা হল। | গ্যালভ্যানোমিটারের বিক্ষেপ বৃদ্ধি পায়। |
কুন্ডলীটির তলের সাথে কোণ করে চুম্বকটির সরণ ঘটানো হল। | গ্যালভ্যামিটারের বিক্ষেপ কমে যায়। বিক্ষেপ সর্বোচ্চ হয় যখন চুম্বকটিকে কুন্ডলীর তলের সাথে লম্বভাবে সরানো হয়। এবং বিক্ষেপ শূন্য হয় যখন চুম্বকটিকে কুন্ডলীর তলের অভিমুখের সমান্তরালে সরানো হয়। |
কুন্ডলীর পাকসংখ্যা বৃদ্ধি করা হল। | গ্যালভ্যানোমিটারের বিক্ষেপ বাড়ে অর্থাৎ বেশি পরিমান গড়িৎচ্চালক বল আবিষ্ট হয় এবং বর্তনীতে বেশী পরিমানে প্রবাহমাত্রা যায়। |
কুন্ডলীতে আবিষ্ট তড়িৎচ্চালক বলের মান কোন্ কোন্ বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হয় তা এই পরীক্ষাগুলি থেকে জানা যায়। আমরা দেখতে পাই আবিষ্ট তড়িৎচ্চালক বলের মান বৃদ্ধি পায় যখন
(i) যখন চুম্বকটি অধিক শক্তিশালী হয়।
(ii) চুম্বকটিকে কুন্ডলীর দিকে আরো দ্রুতবেগে আনা হয়।
(iii) চুম্বকটি কুন্ডলীর যত নিকটবর্তী হয়।
(iv) চুম্বকের সরণের অভিমুখ কুন্ডলীর তলের সাথে লম্বভাবে থাকে।
(V) কুন্ডলীর ক্ষেত্রফল যত বেশি হয়।
এবার দন্ডচুম্বকটির পরিবর্তে দুটি তারের কুন্ডলী নেওয়া হল। তার মধ্যে একটি কুন্ডলীতে ব্যাটারী যুক্ত করা থাকে। এর ফলে ওই কুন্ডলীতে তড়িৎপ্রবাহমাত্রার জন্য তার চারিপাশের অঞ্চলে একটি চৌম্বকক্ষেত্র সৃষ্টি হয়। ওই তড়িৎবাহী কুন্ডলীর জন্য সৃষ্ট চৌম্বকক্ষে এবার অপর একটি তারের কুন্ডলী নিয়ে, ঠিক দন্ডচুম্বকের ন্যায় একই রকম পরীক্ষাগুলি করা হল। দেখা যায় দন্ডচুম্বকের ন্যায় এই তারের কুন্ডলীর জন্যও একই রকম পর্যবেক্ষণ লক্ষ্য করা যায়। নীচে একটি তালিকার মাধ্যমে পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণগুলি গুলি উল্লেখ করো।
পরীক্ষা | পর্যবেক্ষণ |
---|---|
এবার চুম্বকটির পরিবর্তে একটি তড়িৎবাহী দ্বিতীয় কুন্ডলী নিয়ে পরীক্ষাগুলি পুনরায় করা হল। | উপরের সমস্ত ঘটনাগুলির পুনরাবৃত্তি ঘটে। |
এবার প্রথম কুন্ডলীটিকে স্থির রেখে দ্বিতীয় কুন্ডলীর সুইচ অন্ এবং অফ্ করা হল। | সুইচ অন্ করা মাত্রই একটি তাৎক্ষণিক প্রবাহের সৃষ্টি হয় যা পরে শূন্য হয়ে যায়। |
চুম্বক বা তড়িৎবাহী কুন্ডলীটিকে স্থির রেখে দ্বিতীয় কুন্ডলীটিকে স্থির রেখে, দ্বিতীয় কুন্ডলীটিকে কোনো অক্ষ সাপেক্ষে ঘোরানো হল। | একটি পরিবর্তিত প্রবাহমাত্রার সৃষ্টি হয়। ঘূর্ণনের কম্পাঙ্ক যত বেশী হয়, আবিষ্ট তড়িৎচ্চালক বল তত বেশী হয়। |
উপরের এই পরীক্ষাগুলি থেকে বোঝা যায়, শুধু দন্ডচুম্বক নয়, ঘটনা যাও হোক না কেন, যেখানেই চৌম্বকক্ষেত্র এবং চৌম্বক প্রবাহের পরিবর্তন ঘটছে, সেখানেই তড়িৎচ্চালক বল আবিষ্ট হবে।
এখন কিছু প্রশ্ন মনের মধ্যে এসে হাজির হয়:
(1) গ্যালভ্যানোমিটারের মধ্যে প্রবাহমাত্রা লক্ষ্য করা যায় যখন কোনো কিছুর একটা পরিবর্তন হয়।
একেবারে প্রথম ধাপের সমস্ত পরীক্ষাগুলি থেকে সিদ্ধান্ত করা যায় যে, গ্যালভ্যানোমিটারের মধ্যে প্রবাহমাত্রার সৃষ্টি হয়, যখন কোনো কিছুর একটা পরিবর্তন ঘটানো হয়। কুন্ডলী স্থির রেখে চুম্বককে সরানো হলে বা চুম্বককে স্থির রেখে কুন্ডলীকে সরানো হয় বা কুন্ডলীর বর্তনীর সুইচ অফ্ বা অন্ করা হয় বা কুন্ডলীটিকে ঘোরানো হয়, তখনই আবিষ্ট তড়িৎচ্চালক বল সৃষ্টি হয় যা বর্তনীতে প্রবাহমাত্রা সৃষ্টি করে।
(2) আবিষ্ট তড়িৎচ্চালক বলের মান কোনো কিছুর একটা পরিবর্তনের সমানুপাতিক।
উপরের দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষাগুলি থেকে দেখা যায় যে, গ্যালভ্যানোমিটারের বিক্ষেপ বেশী হয় যখন এই অজানা রাশিটির পরিবর্তন অত্যন্ত দ্রুত হয়।
(3) এই অজানা ভৌতরাশি যা পরিবর্তিত হলে আবিষ্ট তড়িৎচ্চালকবলের সৃষ্টি হয় তা হল চৌম্বক ফ্লাক্স।
এখন এই অজানা ভৌতরাশিটি কি? যা পরিবর্তিত হলে আবিষ্ট তড়িৎচ্চালকবল সৃস্টি হয়। এই রাশিটিনির্ভর করে -
(i) চুম্বকের মেরুশক্তি
(ii) চুম্বক ও কুন্ডলীর মধ্যবর্তী দূরত্ব।
(iii) কুন্ডলীর ক্ষেত্রফল
(iv) কুন্ডলীর সাপেক্ষে চুম্বকের গতির অভিমুখ। এই রাশিটির পরিবর্তনের হার নির্ভর করে চুম্বকটির গতিবেগের উপর বা কুন্ডলীটিকে ঘোরানো হলে তার কৌনিক গতির উপর। এই ভৌত রাশিটি হল চৌম্বক ফ্লাক্স (Magnetic Flux)। এটাই হল ফ্যারাডের প্রথম স্বীকার্য।
(4) আবিষ্ট তড়িৎচ্চালক বলের অভিমুখ এমন হ। যা চৌম্বক ফ্লাক্সের পরিবর্তনকে বাধা দেয়।
উপরের পরীক্ষায় আমরা দেখতে পাই, আবিষ্ট তড়িতচ্চালক বলের মান বিপরীত হয় যখন চুম্বকের গতির অভিমুখ পাল্টে দেওয়া হয়।
No comments:
Post a Comment