পরমাণু সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা:
যেকোনও মৌলের শেষ উৎস জানতে পরমাণুর ধারণা প্রথম কল্পনা করা হয় প্রায় খ্রীষ্টজন্মের কয়েক শতাব্দী পূর্বে (প্রায় \(500B.C.\) )। এই ব্যাপারে মহর্ষি কণাদকে পরমাণুর ধারণার পথিকৃৎ হিসাবে মনে করা হয়। তাঁর মতে পরমাণু হল "সদ্কান্বন্নিত্যম্"। এর অর্থ হল পরমাণু সদ্ (অস্থিত্ব আছে এমন কিছু), নিত্য (চিরন্তন, অক্ষয়, অখন্ডনীয়), এর উৎস বা কারণ নেই। এই বিরাট বিশ্বসংস্থিতির মধ্যে কণামাত্র স্থানে এর অবস্থান। অতি সূক্ষ, চোখে দেখা যায় না অথচ সমস্ত সৃষ্টির মূলে এই পরমাণু।
ঋষি কণাদের এই ধারণাতে অবাক হয়েছিলেন ডেমোক্রিটাস (Democritus), লিউপ্পাস (Leuappus) ইত্যাদি গ্রীক দার্শনিকগন। তাঁরা এই কণাগুলির নামকরণ করেছিলেন "atomos", যার অর্থ "not divisible"। এরপর বেশ কয়েক শতাব্দী কেটে যায়। কিন্তু পরমাণু সম্পর্কে কেউ কোনও ধারণা দিতে পারেনি। আর এই পরমাণুর চেয়ে ক্ষুদ্রতর কোনও কণার অস্থিত্বও জানা যায় নি।
পরমাণুর অস্থিত্ব সম্পর্কে প্রাচীন ধারণা:
এর পরে ইংরেজ বিজ্ঞানী জন ডালটন বিভিন্ন রাসায়নিক সংযোগ সংক্রান্ত কয়েক দশক ধরে বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে তিনি আভাস পেয়েছিলেন যে পরমাণুর অস্থিত্ব আছে এবং তারা একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে যুক্ত হয় এবং বিযুক্ত হয়। অবশেষে তিনি 1808 খ্রীস্টাব্দে পরমাণুর বৈশিষ্ট্যগত একটি বাস্তবসম্মত তত্ত্বের উপস্থাপনা করেন, যা ডালটনের পরমাণুবাদ নামে খ্যাত। ডালটনের এই পরমাণুবাদই সর্বপ্রথম পরমাণুকে দার্শনিক তত্ত্ব থেকে বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারায় নিয়ে আসে।
ডালটনের পরমাণুবাদ:
(1) প্রত্যেক পদার্থ অসংখ্য অবিভাজ্য কণা দ্বারা গঠিত। এই কণাগুলির নাম হল পরমাণু বা অ্যাটম।
(2) একই মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলির আকার, আকৃতি, ভর ও রাসায়নিক ধর্মে একই হয়।
(3) বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলির আকার, আকৃতি, ভর ও রাসায়নিক ধর্মে আলাদা হয়।
(4) রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পরমাণুকে সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না।
(5) রাসায়নিক পরিবর্তনের সময় পরমাণুগুলি অখন্ড কণারূপে সরল অনুপাতে যুক্ত বা বিযুক্ত হয়ে যৌগিক পরমাণু (অণু) গঠন করে।
এরপর 1834 সালে মাইকেল ফ্যারাডে কিছু পদার্থের দ্রবনে তড়িৎচালনা করে দেখলেন যে পদার্থগুলির রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটছে। এর থেকে ধারণা পাওয়া গেল পদার্থের আধানগত কিছু বৈশিষ্ট্য আছে এবং পরমাণুর সঙ্গে এই আধান বা চার্জের নিশ্চই কোনও যোগসূত্র আছে। এই ধারণা যে সত্যি তা বুঝতে কেটে গেল আরও কিছু বছর। ঊনিশ শতকের শেষ দিকে ক্যাথোড রশ্মির আবিষ্কারে প্রমানিত হল, পদার্থের পরমাণুর ভিতরে আরও ক্ষুদ্র কণা আছে।
ক্যাথোড রশ্মির আবিষ্কার:
বিজ্ঞানী প্লুকার (1858) ও গোল্ডস্টাইন (1876) ক্যাথোড রশ্মি নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেন। অবশেষে 1878 খ্রীষ্টাব্দে উইলিয়াম ক্রুকস 0.01 mm থেকে 0.001 mm বায়ুচাপে অতি উচ্চ বিভবপ্রভেদ (প্রায় 10, 000 ভোল্ট) প্রয়োগ করে তড়িৎমোক্ষণ নলে ক্যাথোড রশ্মি তৈরি করেন।
তাঁর পরীক্ষার বিস্তারিত বিবরণ:
1878 খ্রীষ্টাব্দে বিজ্ঞানী উইলিয়াম ক্রুকস একটি তড়িৎমোক্ষন নলের (Discharge Tube) অভ্যন্তরে খুব কম চাপে (0.001 cm Hg) বায়ু রেখে ক্যাথোড এবং অ্যানোডের মধ্য উচ্চবিভবের D.C তড়িৎপ্রবাহ চালনা করেন। তিনি দেখেন যে ক্যাথোড থেকে একপ্রকার অদৃশ্য রশ্মি লম্বভাবে নির্গত হয়ে দ্রুত গতিতে অ্যানোডের দিকে যাচ্ছে। এবং অ্যানোডের চারিপাশের দেওয়ালে রঙিন প্রতিপ্রভার সৃষ্টি করছে। ক্যাথোড থেকেই এই রশ্মি নির্গত হয়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে এই রশ্মির নাম দেওয়া হয়েছিল ক্যাথোড রশ্মি (Cathode Ray)।
এরপর বিজ্ঞানী জে. জে. থমসন (1897 খ্রীষ্টাব্দে) এবং স্টোনি এই ক্যাথোড রশ্মির উপর বিস্তৃত গবেষণা করেন। তাঁদের গবেষনায় ক্যাথোড রশ্মি থেকে যে যে বৈশিষ্ট্য বা তথ্যগুলি পাওয়া গিয়েছিল তা হল:
(1) ক্যাথোড রশ্মি সাধারণ আলোকরশ্মির মতো নয়, কিন্তু আলোর ন্যায় সরলরেখায় চলে। এই রশ্মির গতিপথে কোনও অস্বচ্ছ বস্তু রাখলে তার স্পষ্ট ছায়া তৈরি হয়।
(2) ক্যাথোড রশ্মির কণিকাগুলি ক্যাথোড পাতের অভিলম্বভাবে নির্গত হয়।
(3) ক্যাথোড রশ্মি কণা ধর্ম বা জাড্য ধর্ম দেখায়। এর গতিপথে অভ্রের পাতলা পাত দিয়ে তৈরি হালকা পাখা রাখলে, চাকাটি ঘুরতে থাকে।
(4) আলোকরশ্মির ন্যায় ক্যাথোডরশ্মি ফটোগ্রাফিক প্লেটকে প্রভাবিত করে।
(5) ক্যাথোড রশ্মির ভেদন ক্ষমতা আছে। এই রশ্মি অ্যালুমিনিয়াম, সোনা, টিন অভ্র ইত্যাদির পাতলা পাত ভেদ করে যেতে পারে।
(6) মোক্ষন নলের বাইরে পজিটিভ চার্জযুক্ত প্লেট রাখলে, ক্যাথোড রশ্মি ওই প্লেটের দিকে বেঁকে যায়। তাই বলা যায়, ক্যাথোড রশ্মি নেগেটিভ চার্জযুক্ত কণার স্রোত।
(7) ক্যাথোড রশ্মি চৌম্বকক্ষেত্র দ্বারা বিক্ষিপ্ত হয়।
মোক্ষন নলের ভিতরে কোন গ্যাস নেওয়া হয়েছে অথবা কোন্ ধাতুর ক্যাথোড নেোয়া হয়েছে তার উপর ক্যাথোড রশ্মির প্রকৃতি নির্ভর করে না। অর্থাৎ ক্যাথোড রশ্মির উপাদান কণিকা সব পদার্থের মধ্যেই আছে এবং এরা পরমাণুর অন্তর্গত সাব-অ্যাটমিক কণা।
বিজ্ঞানী স্টোনি এই প্রাথমিক বা মৌল উপাদানটিকে প্রথম নাম দেন "ইলেকট্রন"। পরে বিজ্ঞানী মিলিক্যান এই ইলেকট্রনের আধানের মান ও ভর নির্ণয় করেন। এই ইলেকট্রন কণিকা আবিষ্কারের জন্য বিজ্ঞানী জে. জে. থমসনকে 1906 সালে নোবেল প্রাইজ দেওয়া হয়।
ক্যাথোড রশ্মির আবিষ্কার:
বিজ্ঞানী প্লুকার (1858) ও গোল্ডস্টাইন (1876) ক্যাথোড রশ্মি নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেন। অবশেষে 1878 খ্রীষ্টাব্দে উইলিয়াম ক্রুকস 0.01 mm থেকে 0.001 mm বায়ুচাপে অতি উচ্চ বিভবপ্রভেদ (প্রায় 10, 000 ভোল্ট) প্রয়োগ করে তড়িৎমোক্ষণ নলে ক্যাথোড রশ্মি তৈরি করেন।
তাঁর পরীক্ষার বিস্তারিত বিবরণ:
1878 খ্রীষ্টাব্দে বিজ্ঞানী উইলিয়াম ক্রুকস একটি তড়িৎমোক্ষন নলের (Discharge Tube) অভ্যন্তরে খুব কম চাপে (0.001 cm Hg) বায়ু রেখে ক্যাথোড এবং অ্যানোডের মধ্য উচ্চবিভবের D.C তড়িৎপ্রবাহ চালনা করেন। তিনি দেখেন যে ক্যাথোড থেকে একপ্রকার অদৃশ্য রশ্মি লম্বভাবে নির্গত হয়ে দ্রুত গতিতে অ্যানোডের দিকে যাচ্ছে। এবং অ্যানোডের চারিপাশের দেওয়ালে রঙিন প্রতিপ্রভার সৃষ্টি করছে। ক্যাথোড থেকেই এই রশ্মি নির্গত হয়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে এই রশ্মির নাম দেওয়া হয়েছিল ক্যাথোড রশ্মি (Cathode Ray)।
এরপর বিজ্ঞানী জে. জে. থমসন (1897 খ্রীষ্টাব্দে) এবং স্টোনি এই ক্যাথোড রশ্মির উপর বিস্তৃত গবেষণা করেন। তাঁদের গবেষনায় ক্যাথোড রশ্মি থেকে যে যে বৈশিষ্ট্য বা তথ্যগুলি পাওয়া গিয়েছিল তা হল:
(1) ক্যাথোড রশ্মি সাধারণ আলোকরশ্মির মতো নয়, কিন্তু আলোর ন্যায় সরলরেখায় চলে। এই রশ্মির গতিপথে কোনও অস্বচ্ছ বস্তু রাখলে তার স্পষ্ট ছায়া তৈরি হয়।
(2) ক্যাথোড রশ্মির কণিকাগুলি ক্যাথোড পাতের অভিলম্বভাবে নির্গত হয়।
(3) ক্যাথোড রশ্মি কণা ধর্ম বা জাড্য ধর্ম দেখায়। এর গতিপথে অভ্রের পাতলা পাত দিয়ে তৈরি হালকা পাখা রাখলে, চাকাটি ঘুরতে থাকে।
(4) আলোকরশ্মির ন্যায় ক্যাথোডরশ্মি ফটোগ্রাফিক প্লেটকে প্রভাবিত করে।
(5) ক্যাথোড রশ্মির ভেদন ক্ষমতা আছে। এই রশ্মি অ্যালুমিনিয়াম, সোনা, টিন অভ্র ইত্যাদির পাতলা পাত ভেদ করে যেতে পারে।
(6) মোক্ষন নলের বাইরে পজিটিভ চার্জযুক্ত প্লেট রাখলে, ক্যাথোড রশ্মি ওই প্লেটের দিকে বেঁকে যায়। তাই বলা যায়, ক্যাথোড রশ্মি নেগেটিভ চার্জযুক্ত কণার স্রোত।
(7) ক্যাথোড রশ্মি চৌম্বকক্ষেত্র দ্বারা বিক্ষিপ্ত হয়।
মোক্ষন নলের ভিতরে কোন গ্যাস নেওয়া হয়েছে অথবা কোন্ ধাতুর ক্যাথোড নেোয়া হয়েছে তার উপর ক্যাথোড রশ্মির প্রকৃতি নির্ভর করে না। অর্থাৎ ক্যাথোড রশ্মির উপাদান কণিকা সব পদার্থের মধ্যেই আছে এবং এরা পরমাণুর অন্তর্গত সাব-অ্যাটমিক কণা।
বিজ্ঞানী স্টোনি এই প্রাথমিক বা মৌল উপাদানটিকে প্রথম নাম দেন "ইলেকট্রন"। পরে বিজ্ঞানী মিলিক্যান এই ইলেকট্রনের আধানের মান ও ভর নির্ণয় করেন। এই ইলেকট্রন কণিকা আবিষ্কারের জন্য বিজ্ঞানী জে. জে. থমসনকে 1906 সালে নোবেল প্রাইজ দেওয়া হয়।
No comments:
Post a Comment